My article has published in Anandabazar Patrika(29.11.2017). To Read the article click the provided link: http://www.anandabazar.com/editorial/letters-to-the-editor-1.715020

গোটা ব্যাপারটাইতো কল্পনার ভুবনে
‘পদ্মাবতী’ ছবিটি নিয়ে যে প্রতিবাদ ও পালটা প্রতিবাদ চলছে, সে সব দেখে যে প্রশ্নটি প্রথম মাথায় আসে তা হল, সত্যিই কি আসলে পদ্মাবতী রয়েছে? পদ্মাবতীর প্রথম উল্লেখ মেলে মধ্যযুগীয় কবি মালিক মুহম্মদ জায়সীর ‘পদ্মাবৎ’ কাব্যে, প্রকাশকাল ১৫৪০। জায়সীর বর্ণনা অনুসারে, সিংহল দ্বীপের রাজা গন্ধর্বসেনের কন্যার একটি কথা-বলা পাখি ছিল, যার নাম হিরামন। চিতোররাজ রতন সেন হিরামনের মুখে পদ্মিনীর রূপের প্রশংসা শুনে স্বয়ংবর সভায় পদ্মিনীর মন জয় করতে সিংহল দ্বীপে পাড়ি দেন। নানা বাধাবিপত্তির শেষে রতন সেন ও পদ্মাবতীর বিবাহ সম্পন্ন হয়।
কাব্যের দ্বিতীয় ভাগে আবির্ভাব হয় সুলতান আলাউদ্দিন খিলজির। রানি পদ্মাবতীর রূপে মোহিত হয়ে আলাউদ্দিন রতন সেনের কাছে পদ্মাবতীকে দাবি করেন। চিতোররাজ তা অস্বীকার করায় আলাউদ্দিন খিলজি চিতোর আক্রমণ করেন। যুদ্ধে জয়লাভ করতে না পেরে বহুকাল আলাউদ্দিন চিতোর অবরোধ করেন। পরে রতন সেনের সঙ্গে সন্ধি প্রস্তাব করেন এবং প্রাসাদে আমন্ত্রিত হয়ে ছলনার আশ্রয়ে রতন সেনকে বন্দি করেন। চিতোররাজকে মুক্তির শর্তস্বরূপ সুলতান পদ্মাবতীকে দাবি করেন। ইতিমধ্যে, চিতোরের দুই যোদ্ধা গোরা ও বাদল নারীর ছদ্মবেশে রতন সেনকে উদ্ধার করেন। এর পর আলাউদ্দিন খিলজি দ্বিতীয় বার চিতোর আক্রমণ করেন। এই যুদ্ধে রতন সেন পরাজিত ও নিহত হন। সুলতান পদ্মাবতীকে পাওয়ার জন্য প্রাসাদের দিকে অগ্রসর হতেই, পদ্মাবতী অন্য সব রাজপুত রমণীদের সঙ্গে নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে ‘জহর ব্রত’ পালন করেন।
ছবিটি মুক্তি না পাওয়া অবধি বোঝার উপায় নেই, ঠিক কোথায় ইতিহাস বিকৃতি ঘটেছে। দেখতে চেয়েছিলাম বহু শতক আগের কাহিনি কীভাবে জীবন্ত হয়ে ওঠে পরিচালকের হাত ধরে, যেখানে শেক্সপিয়র বা মার্লোর ট্র্যাজিক হিরোর মতন, ব্যর্থ আলাউদ্দিন খলজিকে চিতোরের রমণীদের চিতাভস্ম বাতাসে ওড়াতে দেখব!
ধীমান হালদার নলগোড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা